আমরা অনেকেই চাই ডায়েরি বা দিনলিপি লেখা শুরু করতে। অনেকে হয়তো শুরুও করি, কিন্তু কি লিখবো, কিভাবে লিখবো এইসবকিছু ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। এজন্য নিয়মিতভাবে হয়তো কাজটা করা হয়ে উঠেনা। চলুন আজ আমরা জেনে নেই কিভাবে সুন্দর ও কার্যকরভাবে ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখা যায়। প্রথমেই জেনে নাই ডায়েরি কেন লিখবেন-
সুচিপত্র
ডায়েরি কেন লিখবেন?
ডায়েরি লেখা শুধু অভ্যাস নয়, এটি এক ধরনের মানসিক চর্চা।
- এটি আমাদের আবেগ বুঝতে সাহায্য করে।
- মন হালকা হয়।
- সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হয়।
- জীবনের ছোট-বড় মুহূর্তগুলো ভবিষ্যতের স্মৃতি হয়ে থাকে।
- ডায়েরি লেখার মাধ্যমে মূলত নিজের সাথে পরিচিত হওয়া যায়।

সুবিধামতো একটা মাধ্যম বেছে নিন
যেটিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেটিই বেছে নিন। এটি হতে পারে—
- একটি সুন্দর খাতা
- ফোনের নোট
- গুগল ডক
- কিংবা নির্দিষ্ট কোনো ডায়েরি অ্যাপ
পড়তে পারেনঃ হাতে লেখা ডায়েরি নাকি ডিজিটাল জার্নাল?
একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন
অনেকে রাতে ঘুমানোর আগে লেখেন, কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠে। যে সময়টিতে আপনি শান্ত থাকেন, সেই সময়টাই ডায়েরি লেখার সেরা সময়। অভ্যাস ধরে রাখতে নিয়মিত এটি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তারিখ লিখে শুরু করুন
ডায়েরির প্রতিটি এন্ট্রি তারিখ দিয়ে শুরু করুন।
এতে ভবিষ্যতে ফিরে দেখার সময় অনেক সুবিধা হবে।
যেমন:
১৬ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার
লেখার সময় কোন নিয়ম না মানুন
ডায়েরির সৌন্দর্য তার স্বাধীনতায়।
আপনাকে কোনো ব্যাকরণ মানতে হবে না, কোনো সাহিত্যিক রূপ দিতে হবে না।
আপনি লিখতে পারেন:
- সারাদিনে কী ঘটলো
- কোন ঘটনা আপনাকে আনন্দ বা দুঃখ দিয়েছে
- আজ কী শিখলেন
- কোন বিষয় আপনাকে ভাবিয়েছে
- নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্ন
ডায়েরি আপনার নিজের জন্য। তাই লিখুন আপনার মনের ভাষায়।
সত্যবাদী হোন
সত্যবাদীতাই ডায়েরির প্রাণ। ডায়েরিতে আপনি যত সত্যবাদী হবেন, এটি তত মূল্যবান হবে।
নিজেকে লুকিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। যা অনুভব করছেন, সেটি লিখে ফেলুন শান্তি পাবেন।
বিস্তারিত লিখুন
“আজ দিনটা ভালো কেটেছে।” এর পরিবর্তে লিখতে পারেন—
“আজ পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলো। দীর্ঘদিন পর এমন হাসিখুশি সময় কাটিয়ে মনটা হালকা লাগছে।”
এতে লেখা অনেক জীবন্ত হয়।
একটি ভাবনা বা পরিকল্পনা দিয়ে শেষ করুন
প্রতিটি লেখার শেষে একটি ছোট প্রতিফলন যোগ করতে পারেন:
- আজকের অনুভূতি
- আগামীকালের লক্ষ্য
- যেটির জন্য কৃতজ্ঞ
এতে আপনার মানসিক বিকাশ দৃশ্যমান হবে।
গোপনীয়তা বজায় রাখুন
ডায়েরি খুব ব্যক্তিগত। তাই সেটি এমন স্থানে রাখুন যাতে অন্য কেউ না পড়তে পারে। নিরাপদ মনে হলেই আপনি স্বাধীনভাবে লিখতে পারবেন।
একটি ছোট উদাহরণ
১৬ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার
আজ দিনটা শান্ত কেটেছে। সারাদিন লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সন্ধ্যায় ছাদে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখলাম—অদ্ভুত শান্তি লাগলো। মনে হলো, প্রতিদিনই কিছু না কিছু সুন্দর মুহূর্ত লুকিয়ে থাকে, শুধু খুঁজে নিতে হয়। আগামীকাল একটু তাড়াতাড়ি উঠে নিজের কাজগুলো গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করবো।
ডায়েরি লেখা কোনো দায়িত্ব নয়, এটি নিজের প্রতি একটি ভালোবাসা। প্রতিদিন কিছু সময় যদি নিজের জন্য রাখেন, নিজের মনকে শোনেন—তাহলেই ডায়েরি লেখা হয়ে উঠবে জীবনের অন্যতম সুখের অভ্যাস।









মন্তব্য করুন