নিজ গ্রাম
বখতিয়ার উদ্দিন
উত্তরে পাহাড় ঘেরা সবুজ বনানী
দক্ষিণের সমতল নদী এক খানি,
পূর্ব দিকে এক বিল নদী আর জেলে
পশ্চিমে ছোট্ট খাল জলে ভরা চলে।
ঠিক মাঝখানে আছে কুতুব বাজার
সাঁঝ হলে সবে আসে মিলন হাজার।
এর মাঝে গেঁথে গেছে দেখ এক গ্রাম
এক শব্দে চিনে সবে পহরচাঁদা নাম।
চাঁদের মত পাহাড় আদি কালে দেখে
বিবর্তনে পহরচাঁদা হয়ে গেল মুখে।
পাহাড় সমতল যেন স্বপ্নের রথ।
ধীরে ধীরে বেড়ে গেল এই জন পথ।
পূর্ব পশ্চিম পাকা যে রাস্তা দুই খানা
মাতামুহুরি ঘিরেছে দক্ষিণ সীমানা।
উত্তর দক্ষিণ যথা রেল রাস্তা গেছে
গ্রামের ভিতরে কত পথ যে হয়েছে ।
উত্তরে পাহাড় চূড়া বৃক্ষ সারি সারি
সবুজের সমাহার যুগ যুগ ধরি।
পাহাড়ের ঢালে ঢালে আছে ঘর বাড়ি
কোথায় যাবে বলো যে এই গ্রাম ছাড়ি?
ডিগ্রী মাদ্রাসা হাই স্কুল গাঁর নামে।
শিক্ষা আলয় যথা যে আছে দেখ গ্রামে।
ছয়টি প্রাইমারী যে এক কেজি স্কুল
দুটি দাখিল মাদ্রাসা আরো কত কূল।
সমৃদ্ধি আর ঐতিহ্যে আছে সংগঠন
মসজিদ মন্দির যে যথা প্রয়োজন।
দুই ধর্মের মানুষ গ্রামে বসবাস
আদর্শ গ্রাম হিসাবে আছে ইতিহাস।
বিল ঝিল দিঘি ঘেরা নিজ এই গ্রাম
মাঠে মাঠে ধান পাকে কৃষকের নাম।
রবি মৌসুমে মরিচ বেশি উৎপাদন
মাতামুহুরির জল হয় প্রয়োজন।
গ্রামের মানুষেরা যে সহজ সরল
কত কিছু করে তারা বর্ণনা বিরল।
সাঁঝ হলে সবে আসে কুতুব বাজার
সওদা করে ফিরে যে আলয় আবার।
নিত্য দিনে কত কাজে ব্যস্ত তারা থাকে
যেখানে যায় সবাই গাঁর মান রাখে।
সব পেশার মানুষ গ্রামে বসবাস
কত কালের স্মৃতি জমানো ইতিহাস।
গ্রামের কত জনই শহরে জীবন
ঢাকা চট্টগ্রামে বেশি নয় যে এমন।
পড়ালেখা বা চাকুরী কত প্রয়োজনে
গ্রাম ছেড়ে দূরে থাকে আরো যে কারণে।
যত দূরে থাকে মন যত প্রয়োজন
বারে বারে বেড়ে যায় গ্রামের বাঁধন।
কিছু জন আছে দেখ প্রবাস জীবনে
গ্রাম ছেড়ে টাকা আয় ঘরে শান্তি আনে।
টিউবওয়েল মেস্ত্রী বেশি আছে গ্রামে
সারা দেশে নলকূপ বসাই সু – নামে।
কবি, শিক্ষক, ব্যাংকার, পুলিশ, ডাক্তার
সবে আছে নিজ গ্রামে ভালো যে লাগার।
স্থানীয় আর জাতীয় কত প্রয়োজনে
নেতা আছে ভালো করে নেতৃত্ব যে জানে।
মনে মনে শান্তি লাগে কত ছবি আঁকা,
হৃদয়ে হাজার বার গ্রাম খানি দেখা।
সমৃদ্ধি আর ঐতিহ্য সু – নাম যে আছে
একটি আদর্শ গ্রাম যেন মোর কাছে।