কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণ


সাহিত্য রস
    <span class="verify-badge-svg" style="display:inline-flex; align-items:center; margin-left:6px; vertical-align:middle;">
        <svg width="20" height="20" viewBox="0 0 24 24" fill="none">
            <defs>
                <linearGradient id="grad_blue" x1="0%" y1="0%" x2="100%" y2="100%">
                    <stop offset="0%" style="stop-color:#4fc3ff;stop-opacity:1" />
                    <stop offset="100%" style="stop-color:#1a8fe3;stop-opacity:1" />
                </linearGradient>
                <filter id="shadow_blue" x="-50%" y="-50%" width="200%" height="200%">
                    <feDropShadow dx="0" dy="1" stdDeviation="2" flood-color="#0087ff" flood-opacity="0.4"/>
                </filter>
            </defs>
            <path filter="url(#shadow_blue)" fill="url(#grad_blue)"
                  d="M12 1.5l2.7 4.1 4.8-.5-1.6 4.5 3.5 3.2-4.7 1.5-0.9 4.7-3.8-2.1-3.8 2.1-0.9-4.7-4.7-1.5 3.5-3.2L4.5 5.1l4.8.5L12 1.5z"/>
            <path d="M10.4 14l-2.2-2.2 1.2-1.2 1.1 1.1 3.4-3.5 1.2 1.2-4.7 4.6z" fill="#ffffff"/>
        </svg>
    </span> এভাটার

·

1 মিনিট পড়তে লাগবে 1 min
কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণ

বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যারা কেবল সাহিত্যকেই নয়, পুরো প্রজন্মের চিন্তা ও অনুভূতিকে বদলে দিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদ সেই বিরল নক্ষত্রদের একজন। আজ তাঁর ৭৭তম জন্মদিন — কোটি পাঠকের প্রিয় লেখকের প্রতি আমাদের অন্তহীন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার দিন।

ছবিঃ সংগৃহীত | হুমায়ূন আহমেদ

জন্ম ও শৈশব

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর পিতা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদ। মা আয়েশা ফয়েজ ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী, যিনি সন্তানদের মধ্যে মানবিকতা ও সংস্কৃতিচেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন।

সাহিত্যজীবনের সূচনা

হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ১৯৭২ সালে প্রকাশিত “নন্দিত নরকে” উপন্যাসের মাধ্যমে। এই বইটি প্রকাশের পরই পাঠকমহলে বিপুল সাড়া জাগায়। এরপর তিনি একে একে রচনা করেন শতাধিক উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ ও নাটক—যার প্রতিটি বাঙালির অনুভূতির অংশ হয়ে গেছে।

কথার জাদু ও চরিত্র সৃষ্টি

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন এমন এক কথাশিল্পী যিনি সাধারণ জীবনের ছোট ছোট ঘটনা দিয়ে তৈরি করতেন জাদু। তাঁর সৃষ্টি হিমু, মিসির আলি, ও বাকের ভাই আজও জীবন্ত চরিত্রের মতো মানুষের মনে বেঁচে আছে। তাঁর সংলাপ, হাস্যরস ও মানবিক স্পর্শ বাংলা ভাষাকে দিয়েছে এক নতুন প্রাণ।

চলচ্চিত্র ও নাটকে অবদান

শুধু সাহিত্য নয়, টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রেও হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সমান পারদর্শী। তাঁর নির্মিত নাটক ‘বহুব্রীহি’, ‘আজ রবিবার’, ‘কোথাও কেউ নেই’ আজও বাংলা নাটকের সেরা উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
চলচ্চিত্রে তাঁর “আগুনের পরশমণি”, “শ্যামল ছায়া”, “দারুচিনি দ্বীপ”, “গীতিময় জীবন” — প্রতিটি সৃষ্টি দর্শকের হৃদয়ে অমলিন ছাপ রেখে গেছে।

ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তার কারণ

হুমায়ূন আহমেদের লেখার সহজ-সরল ভাষা, মানবিক স্পর্শ এবং জীবনের বাস্তব আনন্দ-বেদনা ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে করে তুলেছিলো অনন্য। তিনি ছিলেন সেই লেখক যিনি পাঠককে হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন, ভাবিয়েছেন—তবু আশার আলো জ্বেলে গেছেন।

উত্তরাধিকার ও স্মৃতিচিহ্ন

২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান, কিন্তু তাঁর সাহিত্য এখনো প্রতিদিন নতুন পাঠকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। নুহাশ পল্লী, হিমু চরিত্র, এবং তাঁর অসংখ্য বই — সবই যেন এক চিরন্তন ভালোবাসার প্রতীক।

বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি অক্ষরে আজও তাঁর সৃষ্টির গন্ধ মিশে আছে। হুমায়ূন আহমেদ কেবল একজন লেখক নন — তিনি এক অনন্ত অনুভবের নাম, এক প্রজন্মের স্বপ্ন ও ভাবনার প্রতিচ্ছবি। আজ তাঁর জন্মদিনে সাহিত্য রস পরিবারের পক্ষ থেকে রইলো গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরও দেখুন। আপনার ভালো লাগতে পারে।